Site icon Info IT BD

ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো?


বর্তমান যুগে ফ্রিল্যান্সিং শব্দটির সাথে পরিচিত নয় এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ছোট থেকে বড় সকলেই এই শব্দটির সাথে পরিচিত। অনলাইনে যে সকল আয়ের উৎস রয়েছে তার মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং অন্যতম। সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা বিশ্বব্যাপী বেড়েই চলেছে। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং করে অনেকেই সাবলম্বি হয়ে উঠছে।

আজকের এই পোস্টির মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবেন এ বিষয় নিয়ে। তবে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবেন এ বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করার আগে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কিছু বেসিক ধারণা রাখতে হবে।

চলুন আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কি?- What is freelancing? ফ্রিল্যান্সিং এর কি কি কাজ রয়েছে এবং ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

ফ্রিল্যান্সিং কি?-What is freelancing?

ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি মুক্ত পেশা। চাকরি ও ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে মূল ভেদ হলো সময়। অর্থাৎ যে কোনো চাকরি করতে গেলে সকাল ৯.০০ টা থেকে বিকাল ৫.০০ টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। কিন্তু Freelancing কাজে তেমন কোনো সময় সীমা থাকে না। এখানে নিজের পছন্দ অনুযায়ী সময়ে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারে।

Freelancing শব্দটিকে আরও সহজভাবে বর্ণনা করতে অনলাইন ইনকাম টার্ম ব্যবহার করা হয়। সাধারণত অনলাইনে যে সকল কাজ পাওয়া যায় সে সকল কাজ করে যে অর্থ পাওয়া যায় তাকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। অর্থাৎ কোন নির্দিষ্ট কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের হয়ে না কাজ করে চুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করাকে Freelancing বা অনলাইনে আয় করা বলে।

আরও পড়ুনঃ জনপ্রিয় কিছু মুভি ডাউনলোড করার ওয়েবসাইট

ফ্রিল্যান্সিং শব্দটির ধারণা প্রাচীনকাল থেকেই সমাজে প্রচলিত ছিল। তবে কালের বিবর্তনে প্রযুক্তির অভাবনীয় বিকাশের মাধ্যমে এই শব্দটি একটি আলাদা আত্মমর্যাদা পেয়েছে। যাইহোক Freelancing কি সে সম্পর্কে আমাদের সবার কৌতূহল অনেক রয়েছে কারণ মিডিয়া গুলো প্রতিনিয়ত অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে নিউজ করে থাকে।

যার ফলে আমাদের সমাজে এ বিষয় নিয়ে একটি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে যেটা পূর্বে ছিল না। চুক্তিভিত্তিক কাজ করার কারণে একমাত্র এই পেশায় নিজের মালিক নিজেই হওয়া যায়। মোটকথা Freelancing পেশার মাধ্যমে দেশি-বিদেশি অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায় যা দক্ষতা বৃদ্ধি করতে এবং নতুন নতুন কাজ শিখতে সাহায্য করে।

ফ্রিল্যান্সিং এর কি কি কাজ রয়েছে?

ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি পেশা যেটাকে অনেকে অনলাইন ইনকাম হিসেবেও জানে। মূলত যারা ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করে থাকে তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বলা হয়ে থাকে। আজকাল সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে ফ্রিল্যান্সার শব্দটি ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

আজকের সব কিছু প্রযুক্তি ভিক্তিক বলে পৃথিবীর সব জায়গাতেই প্রশাসনিক কাজে এবং ব্যবসায়-বনিজ্যিক কাজ গুলো অনলাইন কেন্দ্রিক প্রতিফলিত হচ্ছে। এতে যেমন কাজের গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি সময় বহু গুসে হ্রাস পাচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ ক্যারিয়ার হিসেবে WordPress শেখার ভূমিকা

প্রকৃতপক্ষে অনলাইনে যে সকল কাজ গুলো পাওয়া যায় সেগুলো গতানুগতিক কাজ গুলো থেকে সামান্য ভিন্ন তবে আলাদা কোন বিষয় না। তাই এই সকল কাজ গুলো করতে হলে আমাদের কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ের উপরে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়।

বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির যুগে অনলাইনে পাওয়া যায় এমন সব কাজের মধ্যে রয়েছে ডিজাইন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, আর্টিকেল রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি।

একজন সাধারণ ফ্রিল্যান্সারের কাজ শেখা থেকে শুরু করে কাজ পাওয়া এবং তা যথাসময় ডেলিভারি দিয়ে পেমেন্ট রিসিভ করার যে প্রক্রিয়া সংঘটিত হয় মূলত সেটিকেই Freelancing কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো?

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। তাহলে চলুন বিস্তারিত আলোচনা সম্পর্কে আসা যাক।

১ম ধাপ- পরিকল্পনা:

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে অনেক ধরনের কাজ রয়েছে। আর এই সকল কাজ গুলোর মধ্যে আপনার কোন অভিজ্ঞতা না থাকলে সে কাজ গুলো আপনি করতে পারবেন না। এই করণে Freelancing পেশায় আসার আগের আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি কি আসলেই নিজেকে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দেখতে চান?

যাইহোক কোন কাজ শুরু করার আগে প্রত্যেকেই পরিকল্পনা করে নেয়। তাই আমাদেরও ফ্রিল্যান্সাং শুরু করার আগে একটি পরিচ্ছন্ন পরিকল্পনা সাজিয়ে নিতে হবে। পরিকল্পনা সাজানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যে অনলআইনে সহজ ও কঠিন উভয় ধরণের কাজ পাওয়া যায় (এখানে কোন কাজ ১ ঘন্টায় করা যায় আবার কোন কাজ শেষ করলে ১৪/১৫ দিন বা বেশি সময় লাগে।

অনলাইনের প্রতিটি কাজের মধ্যে আপনাকে এমন একটি কাজ নির্বাচন করতে হবে যেটি আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে সার্ভিস দিয়ে যাবে। কারণ শেখার পর এমন যেন না হয় সেই কাজে ভ্যলু সেই সময়ে নেই বললেই চলে। এর মূল কারণ অনলাইনের প্রতিটি কাজের ধরণ প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হযে থাকে।

তাই আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে আপনি কি কি শিখবেন, কোথায় থেকে শিখবেন এবং কত সময়ের মধ্যে শিখবেন তা ঠিক করে এগোতে হবে।

২য় ধাপ- আাউটলাইন তৈরি করতে হবে:

আপনার পছন্দের টপিক নির্বাচন করার জন্য আপনাকে একটু পরিশ্রম করতে হবে। ইন্টারনে পাওয়া যায় এমন প্রধান কাজগুলো সার্চ করে একটু রিসার্চ করতে হবে। এতে করে আপনার বিষয়বস্তু সিলেক্ট করতে সহজ হবে।
স্মার্ট ক্যারিয়ার তৈরি করা যাবে দেখে লোভে পড়ে সে সকল বিষয় নির্বাচন করবেন না।

কারণ এতে করে মাঝ পথে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। যাইহোক আপনার পছন্দের বিষয় নির্বাচন করা হয়ে গেলে একটি গাইডলাইন তৈরি করে নিতে পারেন। কাজ শেখার জন্য গাইডলাইন তৈরি করলে সেই অনুযায়ী কাজ শেখা অনেক সহজে আর দ্রুত হয়।

৩য় ধাপ- প্রোজেক্ট তৈরি:

যথেষ্ঠ পরিমান সময় নিয়ে কাজ শেখার পড়ে কাজ হলো কিছু বাস্তবধর্মী প্রোজেক্ট তৈরি করা। অর্থাৎ এতদিন ধরে আপনি যে বিষয়ে শিখেছেন সেই বিষয়ের উপর নির্ভর করে কিছু কঠিন প্রোজেক্ট তৈরি করতে হবে। এই প্রোজেক্ট গুলো ধারাবাহিকভাবে আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে এবং আপনার পোর্টফলিও বাড়াবে।

প্রোজেক্ট তৈরি করার জন্য আপনি গুগল থেকে বা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আইডিয়া নিতে পারেন। অন্যদিকে কাজের গতি বৃদ্ধির জন্য সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আপনার শেখা বিষয়ের উপর এক্সপার্ট এমন কারো সাথে ফ্রিতে কাজও করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ ঘরে বসে অনলাইন ব্যবসায় শুরু করার উপায়?

এতে করে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা বাড়বে। এর ফলে সরাসরি ক্লায়েন্ট এর সাথে কাজ করার কনফিডেন্স পাবেন।সমস্যা সমাধানের জন্য প্রপার রিসার্চ করার বিষয়ে রিয়েল লাইফ এক্সপেরিয়েন্স অনেক কার্যকরি।

৪য় ধাপ- পোর্টফোলিও তৈরি:

কাজ শেখার পরে যখন প্রোজেক্ট করা হয় তখন পোর্টফোলিও করার প্রয়োজন পরে। পোর্টফোলিও বলতে আপনার অভিজ্ঞতার প্রমাণকে বুঝায়। আপনার পোর্টফোলিও যত বেশি কাজজে প্রমাণ বা অভিজ্ঞতা থাকবে অনলাইনে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুন বেড়ে যাবে। একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে তা পোর্টফোলিও হিসেবে রাখলে আশাকরি কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবেন।

৫য় ধাপ- মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট তৈরি করা:

উপরের ধাবগুলো সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর কাজ শুরু করার জন্য মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট তৈরি করতে হবে- Fiverr, Upwork, Freelancer এর মত নির্ভরযোগ্য মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট তৈরি কাজ শুরু করতে পারেন। আর LinkedIn একাউন্ট তৈরি করে আপনাকে আপনার কাজগুলো বা অভিজ্ঞতা গুলো শেয়ার করতে হবে।

তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে আপনি যে মার্কেটপ্লেসে কাজ করেন না কেন আপনাকে সব সময় অ্যাক্টিভ থেকে কাজের জন্য অ্যাপ্লাই করতে হবে।

Info IT BD সকল আপডেট পেতে ফলো করুন আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেলে

উপরে উল্লিখিত ধাপ গুলো সঠিক ভাবে অনুসরণ করলে আশাকরি সফলভাবে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় প্রবেশ করা যাবে। অন্যথায় আপনার সকল পরিশ্রম বৃথা যেতে পারে। তাই আজের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আশাকরি আপনারা সকলেই বুঝতে পেরেছেন। পরবর্তীতে এই আর্টিকেলটি নিয়ে আরও নতুন কিছু নিয়ে আসবো তাই আশাকরি আমাদের সাথেই থাকবেন।

Exit mobile version